হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024: হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024 ব্লগ > হাঙ্গেরি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অবস্থিত একটি দেশ । হাঙ্গেরি বর্তমানে নগরায়নের ক্ষেত্রে খুবই দ্রুত পর্যায়ে এগিয়ে যাচ্ছে । শুধু তাই নয় হাঙ্গেরির উন্নয়ন যাত্রা ইউরোপের অন্যান্য অধিক উন্নত দেশ গুলোর মাত্রার সঙ্গে তাল মেলাতে শুরু করেছে । এজন্যই বহির্বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিকদের কাছে ওয়ার্ক ভিসায় যাওয়ার জন্য হাঙ্গেরি এখন হট ফেবারিট দেশ গুলোর মধ্যে একটি ।
আপনি যদি ইউরপের সেনজেন ভুক্ত দেশ হাঙ্গেরিতে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি কাজের ভিসা নিশ্চিত করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ । হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা প্রাপ্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি স্টেপ বাই স্টেপ পড়তে থাকুন ।
হাঙ্গেরির কাজের ভিসা কেন দরকার?
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024 ব্লগ > প্রথমত আপনি যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকার (EEA) নাগরিক হন, তাহলে হাঙ্গেরিতে চাকরি করার জন্য আপনার কাজের ভিসার প্রয়োজন নেই । আর আপনি যদি ইউরোপীয় কোন দেশের নাগরিক না হন, তাহলে হাঙ্গেরিতে বৈধ ভাবে কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে ।
হাঙ্গেরিতে যারা কাজ করতে চাই, এমন যে কারো জন্য একটি ওয়ার্ক পারমিট থাকা বাধ্যতামূলক । হাঙ্গেরিতে বিভিন্ন ভাবে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া সম্ভব । যেমন,
১. কর্মসংস্থানে স্পন্সরশীপ ভিসার পারমিট
২. প্রাইভেট বিজনেস ভিসার পারমিট
৩. মৌসুমী কাজের ভিসার ওয়ার্ক পারমিট
৪. উচ্চ যোগ্য পেশাদার কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট
হাঙ্গেরির কাজের ভিসার ধরন
হাঙ্গেরিতে আবেদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিসা পাওয়া যায় এবং সেটা আপনার যোগ্যতা এবং পছন্দের উপর নির্ভর করে । নীচে হাঙ্গেরিতে বৈধ কাজের ভিসার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হল:
১. কর্মসংস্থানে স্পন্সরশীপ ভিসা: এটি হাঙ্গেরিতে সর্বাধিক জনপ্রিয় কাজের ভিসা । এটি এমন ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যারা কোন থেকে চাকরির অফার পেয়েছেন বা হাঙ্গেরিয়ান নিয়োগকর্তা বা কোম্পানিতে নিযুক্ত আছেন ।
২. প্রাইভেট বিজনেস ভিসা: স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য বা লাভজনক ব্যবসায় একজন নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা গ্রহণের জন্য আইনি অনুমোদন চাওয়া ব্যক্তিদের জন্য এই ভিসাটি কার্যকর ।
৩. মৌসুমী কাজের ভিসা: মৌসুমী কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার পরিকল্পনাকারী ব্যক্তিদের জন্যই মূলত এই ভিসাটি । হাঙ্গেরিয়ান আইন অনুযায়ী আবেদনকারীদের অবাধ চলাচল এবং বসবাসের অধিকার থাকতে হবে ।
৪. উচ্চ যোগ্য পেশাদার কর্মী: এই স্বতন্ত্র আবাসিক পারমিটটি অত্যন্ত দক্ষ পেশাদার কর্মীদের জন্য হাঙ্গেরিতে বসবাস এবং কর্মসংস্থান উভয়েরই অনুমতি বা পারমিট দেয় । যারা নির্দিষ্ট শর্ত বা মানদণ্ড পূরণ করে তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার পছন্দ হিসেবে কাজ করে এবং এই ভিসাটির ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধাও অনেক বেশি ।
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা পাওয়ার সব থেকে সহজ উপায়
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024 ব্লগ > কোম্পানির স্পন্সরশীপের মাধ্যমে হাঙ্গেরির ওয়ার্ক পারমিট এবং ওয়ার্ক ভিসার ব্যবস্থা করা সব চেয়ে সহজ । শুধু তাই নয়, এই ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খুবই কম খরচে হাঙ্গেরিতে কাজের ভিসায় যাওয়া সম্ভব । আরো আশ্চর্যের বিষয় হল, এই ভিসার জন্য কোন এজেন্সি বা দালালের শরণাপন্ন হওয়া কোন প্রয়োজন নেই । আপনার আত্মবিশ্বাস এবং নিজ চেষ্টায় আপনি হাঙ্গেরির ভিসা পেতে পারেন । তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে স্টেপ বাই স্টেপ এগোতে হয় । নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে ।
হাঙ্গেরির কাজের পারমিটে জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, হাঙ্গেরিতে আপনার নিয়োগকর্তা কোম্পানি আপনার পক্ষে হাঙ্গেরির কাজের পারমিটের জন্য আবেদন করবেন । এক্ষেত্রে খরচ কোম্পানির । আবেদনের জন্য কোম্পানিকে উপরোক্ত সকল ডকুমেন্টস দিতে হবে । By Mail or Courier Service এর মাধ্যমে ।
হাঙ্গেরির কাজের ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে
এখানে একটি হাঙ্গেরি কাজের ভিসা ইস্যু করার জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ ডকুমেন্টসের তালিকা দেওয়া হলো,
- NID কার্ড ।
- পাসপোর্ট: কমপক্ষে 3 মাসের মেয়াদ থাকতে হবে ।
- ভিসা ফর্ম: থাকার সময়কাল সঠিকভাবে পূরণ এবং স্বাক্ষর করতে হবে । সেখানে কাজের ভিসার পারমিটের পাশাপাশি আবাসিক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে ।
- ছবি: সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের 2টি সাম্প্রতিক রঙিন ছবি (3.5×4.5 সেমি) সংযুক্ত করতে হবে ।
- হেলথ ইন্সুরেন্স: বৈধ হেলথ ইন্সুরেন্স থাকতে হবে ।
- এক্সপেরিএন্স সার্টিফিকেট ব অভিজ্ঞতা সনদ ।
- রেফারেন্স: হাঙ্গেরিতে বসবাস রত আত্নীয় স্বজন বা পরিচিত কেও থাকলে তার রেফারেন্স তবে সেটা ব্যাধ্যতা মূলক নয় ।
- আর্থিক প্রমাণ: ব্যাংককে কয়েক লক্ষ্য টাকার ফান্ড দেখাতে হতে পারে ।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা - যদি থাকে ।
- ইংরেজি দক্ষতা তবে IELTS এর ব্যাধ্যবাতকতা নেই ।
- হেল্থ ইন্সুরেন্স ।
- সরাসরি কোম্পানি হতে জব অফার লেটার ।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ।
- ইউরোপিয়ান স্টাইল সিভি ।
- ইউরোপিয়ান স্টাইল কাভার লেটার ।
কোম্পানি প্রার্থীর সকল ডকুমেন্টস পাওয়ার পর (Lawyer) লয়ারের মাধ্যমে হাঙ্গেরির ইমিগ্রেশনে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন । পারমিট বের হতে ১৫-৪৫ দিন সময় লাগতে পারে ।
হাঙ্গেরির কাজের ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024 ব্লগ > এই স্টেপটি প্রার্থীকে হ্যান্ডল করতে হবে । কোম্পানির কাছে থেকে জব অফার, ওয়ার্ক পারমিট কপি সহ উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো দিয়ে, প্রার্থী নিজে নিকটস্থ হাঙ্গেরির এম্বাসিতে ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করবেন । যদি হাঙ্গেরির এম্বাসি বাংলাদেশে না থাকে তাহলে ইন্ডিয়া অথবা ডুবাই গিয়ে সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করবেন । অবশ্যই এর আগে বাংলাদেশ থেকেই VFX Global সিডিউল নিয়ে সেখানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে । এ ক্ষেত্রে VFX Global এর সকল খবর প্রার্থী বহন করবে ।
ভিসা আবেদনের ৭-৩০ দিনের মধ্যে ভিসা হয়ে যাবে । এরপর প্রার্থী বাংলাদেশ থেকে ম্যান পাওয়ার ক্লিয়ারেন্স করে, এয়ার প্লেনের টিকেট কেটে ফ্লাই করে হাঙ্গেরিতে গিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করতে পারবেন ।
হাঙ্গেরির কাজের ভিসা ফি
হাঙ্গেরির কাজের ভিসার জন্য ফিস 110 ইউরো । আপনি কাজের ভিসার জন্য একটি কূটনৈতিক বা কনস্যুলার মিশনে, ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট-জেনারেল ফর এলিয়েনস পুলিশিং (NDGAP) এর ক্লায়েন্ট সার্ভিস অফিসে বা এনডিজিএপি-এর ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ইলেকট্রনিকভাবে অর্থ প্রদান করতে পারেন ।
শেষ কথা
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ভিসা 2024 ব্লগ > সর্বোপরি, উপরোক্ত এই প্রসেসিং এর মাধ্যমে যদি কেউ হাঙ্গেরির কোম্পানি থেকে ১টি জব অফার ও ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করতে পারলে, মাত্র ১১০ ইউরো ভিসা ফি দিয়ে কোন দালাল বা এজেন্সি ছাড়াই বাংলাদেশ থেকেই ওয়ার্ক ভিসায় হাঙ্গেরি যাওয়া সম্ভব ।